২০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৫ অপরাহ্ন, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ,ঘোড়[ঘাট(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে আগুনে সর্বস্ব হারানো পরিবারের পাশে দাড়ালো ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রশাসন। “মেলা কষ্টে টিনের দুকনা ঘর বানাছিনু, আগুনে ঘরের জিনিস সহ তাবত পুড়ে শেষ। আইতত ঘুমামো কোটে, নতুন ঘর বানবার টেকা পামো কোটে! সেই চিন্তায় দুইদিন থেকে খাওয়া দাওয়া বন্ধ। বিকেলে দেখোছি ঘরের নয়া টিন আর বস্তা নিয়া অফিসারের গাড়ি হামার বাড়িত আসিছে। তখন মনে হলো আল্লায় মনে হয় বাড়িত ফেরেস্তা পাঠাছে।” এমন কথা বলছিলেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার উত্তর দেবীপুর গ্রামের বৃদ্ধ আহাদ আলী।
রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের আগুনে পুড়ে যায় দিন মজুর বৃদ্ধ আহাদ আলী ও তার ছেলে মনসুর আলীর মাথা গোঁজার শেষ ঠাঁই দুটি শোবার ঘর ও রান্নাঘর সহ পুরো বাড়ির আসবাবপত্র। প্রাথমিক ভাবে ২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছিলেন ফায়ার সার্ভিস।
ঘটনার একদিন পর মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানবিক সহযোগীতা নিয়ে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম সহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহম্মেদের নির্দেশে এবং জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তার সহায়তায় নতুন ঘর নির্মানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে ৪ বান্ডিল টিন এবং নগদ টাকা তুলে দেন কর্মকর্তারা। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল, ডাল, তেল, লবন, চিনি ও শীত নিবারণের জন্য কম্বল সহ চার বস্তা শুকনো খাবার সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঘোড়াঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান, ১নং বুলাকীপুর ইউপি চেয়ারম্যান সদের আলী খন্দকার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান প্রমুখ।
ভূক্তভোগী আহাদ আলীর ছেলে দিনমজুর মনসুর আলী বলেন, অনেক কষ্টে টিন দিয়ে দুটি শোবার ঘর বানিয়েছিলাম। এক ঘরে আমি ঘুমাতাম। অপর ঘরে আমার বাবা। তবে আগুন আমাদের সব শেষ করে দিয়েছে। (মঙ্গলবার) প্রশাসনের আমাদেরকে যে সহযোগীতা প্রদান করা হয়েছে, তার কৃতজ্ঞতায় প্রকাশ করার মত নয়। যা পেয়েছি, তা দিয়ে আবারো মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু বানাবো। নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।
ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিনই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের খোঁজ খবর নিয়েছি। ঘটনার বিষয়ে জেলা প্রশাসক স্যারকে অবগত করলে, তিনি তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদানের নির্দেশ প্রদান করেন। আগামীতেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগীতা প্রদান করা হবে।